ছাত্রদলের সংকট সমাধান, ঈদের পর কাউ‌ন্সিল

নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে সংকট অবশেষে সমাধান হয়েছে। চল‌তি সপ্তাহে প্রত্যাহার করা হবে ১২ নেতার বহিষ্কারাদেশ। ক্ষুব্ধ নেতাদের যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। পাশাপা‌শি ছাত্রদলের কাউ‌ন্সিল ঘিরে গ‌ঠিত নির্বাচন পরিচালনা, বাছাই ও আপিল কমিটিতে ক্ষুব্ধ নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

এছাড়া নতুন করে ছাত্রদলের কাউন্সিল ঈদুল আজহার পর যেকোনো এক‌দিন নির্ধারণ করা হবে। এই কাউ‌ন্সিল গত ১৫ জুলাই অনু‌ষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বিএন‌পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ বৈঠক হয়। লন্ডন থেকে স্কাই‌পির মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন তিনি। এই বৈঠকের মধ্য দিয়েই মূলত ছাত্রদলের সংকট সমাধান হলো। বৈঠকে তারেক রহমানের যেকোনো সিদ্ধান্ত মানার অঙ্গিকার করেছেন বিলুপ্ত কমিটির ছাত্রনেতারা।

ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানে দায়িত্ব দেওয়া হয়ে‌ছি‌ল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যা মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং যুগ্ম মহাস‌চিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে। মূলত তারাই দফায় দফায় ক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সংকট সমাধানের নেপথ্যে কাজ করেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন সহযোগিতা করেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, হাবিবুর রশিদ হাবিব, তাইফুল ইসলাম টিপু,বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, আব্দুল মতিন। বিদ্রোহীদের মধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সন্তান ভুল করলে তাৎক্ষণিক শাসনও বাবা করে, পরোক্ষণেই ক্ষমাও বাবা করে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করার মাধ্য দিয়ে ছাত্রদলের সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।’

ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপ‌তি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, ‘আমাদের আর কোনো ক্ষোভ নেই। রাজনৈতিকভাবে ভাইয়া (তারেক রহমান) আমাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। তি‌নি আমাদের ছাত্রদলের কাউন্সিলে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে আমরা সহযোগিতা করব। তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব যা তাকে কথা দিয়েছি।’

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনু‌ষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ ক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির, মামুন বিল্লাহ, জহিরউদ্দিন তুহিন, জয়দেব জয়, বায়েজিদ আরেফিন, দবিরউদ্দিন তুষার, আজিজ পাটোয়ারিসহ আরও ৪০জনের মতো ছাত্রনেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, ছাত্রদলের সাবেক নেতারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বক্তব্য দেন। তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। বিগত দিনে ছাত্রদল নিয়ন্ত্রনকারী কথিত সিন্ডিকেট নিয়ে নিজেদের তিক্ততার কথাও তুলে ধরেন।

বৈঠকে প্রায় ২০ জনের মতো নেতা তাদের বক্তব্যে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দাবি করেন। তারা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত মেনে ছাত্রদলের কাউন্সিল পর্যন্ত এ কমিটি চান। তাদের নেতৃত্বে কাউন্সিল শেষে এ সংগঠন থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নেওয়ার কথাও বলেন ক্ষুব্ধ নেতারা। এ সময় তারেক রহমান ক্ষুব্ধ নেতাদের সবার কথা শুনেন।

ছাত্রদলের সাবেক একজন সহসভাপতি বলেন, ‘বৈঠকে বিগত এক যুগের নির্যাতনের কথা তুলে ধরে ছাত্রনেতারা বলেছেন, তারা এ দলের হয়ে কাজ করতে চান। এ সময়ে তারা সাময়িক সময়ে নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির জন্য তারেক রহমানের কাছে ক্ষমা চান।’ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।

আপনি আরও পড়তে পারেন